বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি। রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকে চিঠি ও একাধিকবার ফোন দিয়েও বিদ্যালয়ে আনতে পারেনি প্রধান শিক্ষক। সেই শিক্ষকের নাম শাহনেওয়াজ আলী। তিনি ছয় মাস থেকে বিদ্যালয় উপস্থিত হননি অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের।
জানা যায়, সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আলী ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে গেলে তিনিও আত্মগোপনে চলে যান। পরে বদরগঞ্জ থানায় এশিয়ান টিভি রংপুর ব্যুরো প্রধান সাংবাদিক বাদশা ওসমানীর মামলায় গ্রেফতার হন। গ্রেফতার হওয়ার পরে বিদ্যালয় থেকে সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আলী কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিছুদিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
জামিনে মুক্তি পাওয়ার ৬ মাস অতিবাহিত হলেও বিদ্যালয়ে যাননি তিনি। এছাড়াও ২০২৩ সালে বিদ্যালয় কর্মরত এক নারী কেলেঙ্কারির জন্য বিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরে ম্যানেজিং কমিটিকে ম্যানেজ করে ১৫ দিন পর সাময়িক বরখাস্ত উইড্র করে নেন বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। তার নামে মারামারি জমি দখলেরও মারামারির অভিযোগ।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আলীকে বিদ্যালয়ে আসার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছিল। মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করে ডাকা হয়েছিল।সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার ৬ মাস হলেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি। নতুন কমিটি হয়েছে আমরা সবাই বসে মিটিং করে তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিব।
চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আলী আওয়ামীলীগ ক্ষমতা থাকাকালীন ঠিকমতো স্কুলে আসতেন না। তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিল মিটিং করে বেড়াতেন।
তারপরও তার হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেখানো হতো। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অনেক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে পূর্বেও বরখাস্ত করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে ম্যানেজিং কমিটি কে ম্যানেজ করে পুনরায় বিদ্যালয়ে আসেন। সরকার পালানোর পর তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। সেই মামলার কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ছয় মাস হল তিনি বিদ্যালয় আসেননি।
কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক জানান, চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আলী তৎকালীন এমপি ডিউক চৌধুরী ও পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরীর ক্যাডার। সে আমার ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি। আওয়ামী লীগের দাপট দেখিয়ে ইউনিয়নে বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন। জমি দখল মারধর করাই ছিল তার পেশা।
এছাড়াও নারি কেলেঙ্কারিরও ঘটনাও রয়েছে, তার বিরুদ্ধে। তিনি কালুপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান একরামুল হক দুলুর বেশ কিছু জমি দখল করে নিয়েছিলেন। কিছুদিন আগে তার ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় তখন থেকেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার ছেলে।
এছাড়াও সাময়িক বরখাস্তকৃত শিক্ষক শাহনেওয়াজ আলী অনেক হতদরিদ্র অসহায় পরিবারকে সুদের টাকায় লাভের প্রলোভোন দেখিয়ে নি:স্ব করার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক শাহনেওয়াজ আলীর সঙ্গে মুঠোফোন যোগাযোগ করা চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এম এইচ মাহবুবুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, চম্পাতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এই বিষয়ে কিছুই জানাননি। আমি এ বিষয়ে জানিনা।